ছোট বেলায় পড়া-লেখার তেমন চাপ ছিল না। এছাড়া এখনকার মতো তখন স্মার্ট ফোনও ছিল না। তাই রাতে দ্রুতই ঘুমিয়ে যেতাম। কখনো কখনো হয়তো সন্ধা হওয়ার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে যেতাম। তো কোনো কোনো সময় রাত দুপুরে ঘুম ভেঙ্গে যেত। চারপাশে নিঃশব্দ। এই নিঃশব্দের মধ্যে একটা শব্দ শোনা যেত। শব্দটা দেওয়ালে টাঙানো ঘড়িটা থেকে আসত। ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ। রাতে ঘুম ভাঙ্গার পর পরই এই শব্দটা শুনতে পেতাম। প্রথমে শব্দটা খুব আস্তে আস্তে শোনা যেত। কিন্তু যখন খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতাম শব্দটা আরো জোরে ও স্পষ্ট শোনা যেত। মনে হত ঘড়িটা এখন আর দেওয়ালে টাঙানো নেই। কেউ ঘড়িটা দেওয়াল থেকে খুলে এনে আমার কানের পাশে ধরে রেখেছে। খুবই ভয় করতো তখন। এই শব্দটার সাথে কখনো কখনো আরো দু'একটা শব্দ যোগ হতো। কখনো ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ বা কখনো দূর থেকে ভেসে আসা কুকুরের ডাক। ফলে ভয়ের পরিমাণটা আরো বেড়ে যেত। তাই তখন দ্রুত ঘুমানোর চেষ্টা করতাম। কাঁথা দিয়ে কান পেচিয়ে ধরতাম যেন শব্দ কানে না আসে। যখন এসবেও কাজ হতো না তখন মা'কে ডেকে তুলতাম। ভয়টা একটু কমতো। ফলে আবার ঘুমাতে পারতাম। এখন বড় হয়ে আর দ্রূত ঘুমানো হয় না। তাই রাত দুপুরে ঘুমও ভাঙ্গে না এবং ঐ মূহুর্তটাও আর আসে না। এছাড়া ছোটবেলার মতো ঐ ভয়ও কাজ করে না। তাই ছোট বেলার ঐ মূহুর্তটা খুবই মিস করি।
No comments:
Post a Comment